মুড়ির রসগোল্লা: সহজ পদ্ধতিতে বানানোর রেসিপি

বাঙালি মিষ্টির প্রতি ভালোবাসা এক অনবদ্য সংস্কৃতি, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলেছে। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি খাবারের মধ্যে রসগোল্লা বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। এই রসগোল্লা সাধারণত ছানা বা পনির দিয়ে তৈরি হয়, কিন্তু মুড়ি দিয়ে তৈরি রসগোল্লা একটি অভিনব ও সহজ পদ্ধতি। মুড়ির রসগোল্লা তৈরি করতে সময় কম লাগে এবং এটি তৈরি করতে প্রয়োজনীয় উপকরণগুলোও সহজলভ্য।

মুড়ির রসগোল্লার উপকরণ
উপকরণ
মুড়ি – 2 কাপ
ঘি – 1 টেবিল চামচ
দুধ – 2 কাপ
চিনি – (2 টেবিল চামচ – মণ্ড + 1 কাপ – রস)
গুঁড়া দুধ – 2 টেবিল চামচ
ময়দা – 1/4 কাপ
মুড়ির গুঁড়া – 1 কাপ
এলাচ গুঁড়া – 1/2 চা চামচ
পানি – 3 কাপ (রস)
এলাচ – 3-4 টি (রস)
তেল – ভাজার জন্য

মুড়ি তৈরি:

মুড়ি রসগোল্লার মূল উপকরণ হলো মুড়ির গুঁড়া। এটি তৈরি করতে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

  1. প্রথমে মুড়ি শুকনো কড়াইয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিন। এতে মুড়ির সাদাটা একটু বাদামী হবে এবং মুড়িতে একটি সুস্বাদু খাস্তা স্বাদ যুক্ত হবে।
  2. ভাজা মুড়ি একটি ব্লেন্ডারে নিয়ে ভালোভাবে গুঁড়া করে নিন। মুড়ির গুঁড়া যতটা সম্ভব সূক্ষ্ম হওয়া উচিত, যাতে রসগোল্লার টেক্সচার ভালো হয়।
  3. তৈরি করা মুড়ির গুঁড়া চালনিতে ছেঁকে নিন, যাতে বড় অংশগুলো আলাদা হয়ে যায় এবং সূক্ষ্ম গুঁড়া পাওয়া যায়।

রসগোল্লা তৈরি:

মুড়ির রসগোল্লার নরম মণ্ড তৈরি করতে কিছু অতিরিক্ত উপকরণের প্রয়োজন হয়। এটি তৈরি করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. একটি ননস্টিক কড়াইয়ে দুধ গরম করতে শুরু করুন। দুধ ফোটানোর দরকার নেই, শুধু একটু গরম করলেই হবে।
  2. গরম দুধে ২ টেবিল চামচ চিনি যোগ করুন এবং চিনি গলে যাওয়া পর্যন্ত নাড়ুন।
  3. দুধের মধ্যে গুঁড়া দুধ যোগ করুন এবং ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।
  4. এরপর মুড়ির গুঁড়া এবং ময়দা যোগ করুন। সমস্ত উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে একটি নরম মণ্ড তৈরি করুন। মণ্ডটি মসৃণ হওয়া উচিত যাতে রসগোল্লার টেক্সচার ভালো হয়।
  5. মণ্ড থেকে ছোট ছোট অংশ নিয়ে রসগোল্লার আকারে গোল্লা তৈরি করুন। প্রতিটি গোল্লা সমান আকারের হওয়া উচিত যাতে রান্নার সময় সবগুলো সমানভাবে রান্না হয়।
RELATED POST  অভ্যাস নিয়ে উক্তি

চিনির রস তৈরি ও পরিবেশন:

রসগোল্লার স্বাদ বাড়ানোর জন্য চিনির রস তৈরি করতে হবে। এটি তৈরি করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. একটি কড়াইয়ে পানি গরম করুন। পানি পুরোপুরি ফুটে উঠলে এতে চিনি এবং এলাচ যোগ করুন।
  2. চিনি সম্পূর্ণ গলে গেলে ও এলাচের সুবাস ছড়িয়ে পড়লে রস তৈরি হয়ে যাবে।
  3. রস ঠান্ডা করে রাখুন, যাতে এটি রসগোল্লার সঙ্গে মিশে সুস্বাদু হয়ে ওঠে।

রসগোল্লাগুলো চিনির রসে ডুবিয়ে রেখে কিছুক্ষণ রাখতে পারেন, যাতে রসগোল্লাগুলো রস ভালোভাবে শোষণ করতে পারে। এটি পরিবেশনের আগে মিষ্টি গুলোকে ঠান্ডা করে নিন।

উপভোগ করুন সুস্বাদু মুড়ির রসগোল্লা:

মুড়ির রসগোল্লা একটি সহজ ও সুস্বাদু মিষ্টি যা আপনি যেকোনো সময় তৈরি করতে পারেন। এটি বিশেষ করে উৎসবের সময় বা অতিথি আপ্যায়নে একটি অনবদ্য পছন্দ হতে পারে। মুড়ির রসগোল্লার বিশেষত্ব হলো এটি সাধারণ উপকরণ দিয়ে তৈরি হলেও এর স্বাদ ও গুণে অনন্য।

মুড়ির রসগোল্লা আপনার মিষ্টি তৈরির প্রচেষ্টাকে আরও সহজ করে তুলবে এবং আপনাকে দেবে এক নতুন ধরনের মিষ্টি খাবারের অভিজ্ঞতা। মিষ্টি প্রেমীদের জন্য এটি একটি বিশেষ প্রণালী যা সহজেই তৈরি করা যায় এবং এর স্বাদ আপনার মন ভরিয়ে তুলবে।

মুড়ির রসগোল্লা তৈরি করে আপনাদের পরিবারের সবাইকে আনন্দিত করুন এবং বাঙালি মিষ্টির ঐতিহ্যকে নতুন রূপে উপভোগ করুন। চিরাচরিত রসগোল্লার স্বাদ পেতে চাইলে, মুড়ির রসগোল্লা একটি অসাধারণ বিকল্প হতে পারে। তৈরির সহজ পদ্ধতি এবং কম সময়ে তৈরি করার সুবিধা মুড়ির রসগোল্লাকে করে তুলেছে বিশেষ।

উপসংহার:

মুড়ির রসগোল্লা একটি সুস্বাদু এবং সহজে তৈরি করা যায় এমন বাঙালি মিষ্টি। এটি বানানো যেমন সহজ, খেতেও তেমনি সুস্বাদু। মুড়ি, দুধ, চিনি ও এলাচের মিশ্রণে তৈরি এই মিষ্টি যে কারো মন জয় করে নিতে পারে। তাই, পরবর্তী উৎসব বা বিশেষ অনুষ্ঠানে এই মুড়ির রসগোল্লা তৈরি করে দেখতে পারেন এবং প্রিয়জনদের সাথে উপভোগ করতে পারেন।

RELATED POST  রোমান্টিক বাংলা গানের লিরিক্স

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top